সূচনা(Introduction)
ড্রাফটিং হলো কোনো একটি বস্তুকে কাগজের উপর নিয়মতান্ত্রিক রেখাসমূহের মাধ্যমে উপস্থাপন করার কৌশল। প্রকৌশল প্রযুক্তি কার্যক্রমে যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ড্রাফটিং বা নকশার ব্যবহার অতি প্রাচীন। ভাই ড্রাফটিং শিক্ষা, শিক্ষাক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। প্রচলিত পদ্ধতিতে ড্রাফটিং কাজে টি-স্কয়ার (T- Square) সেট স্কয়ার (Set square), কম্পাস (Compass), ইরেজার (Eraser) ইত্যাদি ব্যবহার করে নকশা অংকন করা হয়। বর্তমানে ড্রাফটিং নকশা অংকনের ক্ষেত্রে কম্পিউটার প্রয়োগের ফলে উক্ত যন্ত্রপাতির ব্যবহার নাই বললেই চলে। কম্পিউটারের সাহায্যে নকশা অংকন ও ডিজাইন করার পদ্ধতিকে কম্পিউটার এডেড ডিজাইন বা ক্যাড (CAD) নামে অভিহিত করা হয়। বাস্তবে ক্যাড হলো অংকন ও ডিজাইন করার একটি আধুনিক স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি যাতে কম্পিউটার ছাড়াও অন্যান্য আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির প্রয়োজন হয় ।
এ অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-
উপর্যুক্ত শিখনফল অর্জনের লক্ষ্যে এই অধ্যায়ে আমরা চারটি জব সম্পন্ন করব। এ জবের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ড্রাফটিং কাজে OSH নীতি অনুসরণ পূর্বক ড্রাফটিং টুলস, ইকুইপমেন্ট ও যন্ত্রপাতি সনাক্তকরণ এবং সংরক্ষণ করার দক্ষতা অর্জন করব। জবগুলো সম্পন্ন করার পূর্বে প্রথমেই প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক বিষয়সমূহ জানব।
ড্রইং ও ড্রাফটিং (Drawing and Drafting):
ড্রইং (Drawing)
ড্রইং একটি সার্বজনীন স্বীকৃত ভাষা যা মানব সভ্যতার শুরু থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। কতগুলো রেখাকে সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবহার করে কোনো বস্তুকে কাগজ বা অন্য কোনো তলে উপস্থাপন করার কৌশলকে ড্রইং নামে অভিহিত করা হয়। ৰাস্তব বস্তুকে চিত্রে উপস্থাপন করা, পরিকল্পনা করা অথবা বস্তুর সংরক্ষণ অংকনের সাহায্যে সম্ভব হয়। ড্রইং বা অংকনকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা
১। শৈল্পিক ড্রইং (Artistic Drawing) যা শিল্পীর মন, হাত, রঙ তুলির সাহায্যে উদ্ভাসিত এবং
২। প্রকৌশল ড্রইং (Engineering Drawing) প্রকৌশলী বা প্রযুক্তিবিদ কর্তৃক উদ্ভাসিত ড্রইং
শৈল্পিক ড্রইং(Artistic Drawing): শিল্পীর মন, হাত, ভুলি, রঙ সাহায্যে আঁকা শিল্পকর্মকে শৈল্পিক ড্রইং বলে। যেমন- শিল্পীর আঁকা ছবি।
প্রকৌশল ড্রইং(Engineering Drawing): কতকগুলো রেখাকে সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবহার করে বিভিন্ন রকম ইন্জিনিয়ারিং বস্তু যেমন- বিল্ডিং, রোড, ব্রিজ, মেশিন ইত্যাদিকে কাগজে উপস্থাপনের কৌশল হলো প্রকৌশল ড্রইং। প্রকৌশল ড্রইং করার কাজে সব সময় ড্রইং ইনস্ট্রুমেন্ট ব্যবহার করা হয়। একটি বস্তুর গঠনে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার তথ্য ও মানানসই স্কেল সহযোগে ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং করা হয়ে থাকে।
ইঞ্জিনিয়ারিং দৃষ্টি কোণ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং বিষয়টিকে সুলত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
(১) জিওমেট্রিক্যাল (Geometrical) ড্রইং
(২) মেকানিক্যাল (Mechanical) ড্রইং
(৩) সিভিল (Civil) ড্রইং
(B) ইলেকট্রিক্যাল (Electrical) ড্রইং
(৫) অ্যারোনটিক্যাল (Aeronatical) ড্রইং
(৬) আর্কিটেকচারাল (Architechtural) ড্রাফটিং
(৭) প্রোসেস পাইপিং (Process Piping) বা পাইপ লাইন ড্রাফটিং ইত্যাদি।
জিওমেট্রিক্যাল (Geometrical) ড্রইং
জ্যামিতিক বন্ধু যেমন-ত্রিভুজ, আয়তক্ষেত্র, বর্গক্ষেত্র, কোণ, পিরামিড, প্রিজম ইত্যাদি বন্ধুকে কাপজে উপস্থাপন করার কৌশলই জিওমেট্রিক্যাল। জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং আবার দুই ভাগে বিভক্ত। যথা-
(১) প্লেইন জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং (Plain Geometrical Drawing)
(২) সলিড জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং (Salld Geometrical Drawing)
(১) গ্রেইন জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং (Plain Geometrical Drawing) দ্বিমাত্রিক বস্তু যেমন- ত্রিভুজ, আয়তক্ষেত্র, বর্গক্ষেত্র ইত্যাদি জ্যামিতিক বস্তুর কাগজে অংকন প্রক্রিয়াকে প্লেইন জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং বলে।
(২) সলিড জিওমেট্রিক্যাল ইং (Solid Geometrical Drawing) ত্রিমাত্রিক বস্তু যেমন- কৌণ, সিলিন্ডার, প্রিজম, পিরামিড, কিউৰ জাতীয় জ্যামিতিক বস্তুর কাগজে অংকন প্রক্রিয়াকে সঙ্গিড জিওমেট্রিক্যাল ড্রইং বলে।
ড্রাফটিং (Drafting): টেকনিক্যাল বা ইঞ্জিনিয়ারিং অবজেক্টকে ড্রইং করার প্রক্রিয়াকে ড্রাফটিং বলে। ড্রাফটিং কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ড্রাফটম্যান বলে।
ড্রাফটিং দুই ভাগে বিভক্ত। যথা-
১) হস্তকৃত (Manual) ড্রাফটিং এবং
২) কম্পিউটারের সাহায্যে ড্রাফটিং ।
হস্তকৃত (Manual) ড্রাফটিং
হস্তকৃত ড্রাফটিং-এ ড্রাফটসম্যান অংকনের প্রচলিত যন্ত্রপাতি যেমন- ডিভাইডার, টা ক্ষয়ার, সেট স্কয়ার, কম্পাস, রাবার, পেনসিল ইত্যাদি ব্যবহার করে ড্রইং করে থাকে।
কম্পিউটারের সাহায্যে ড্রাফটিং :
কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোনো অবজেক্ট এর ডিজাইন ও ড্রাফটিং করার কৌশলকে কম্পিউটারের সাহায্যে ড্রাফটিং ৰোৱায়৷ ডিজাইন কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার প্রযুক্তিকে কম্পিউটার এডেড ডিজাইন (Computer Aided Design) বা সংক্ষেপে ক্যাড (CAD) বলে।
ড্রইং করার যন্ত্রপাতি (Drawing Instrument):
হস্তকৃত বা ম্যানুয়্যাল ড্রাফটিং-এ যে সমস্ত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি প্রয়োজন তার একটি তালিকা নিচে দেয়া হলো-
১. ড্রইং টেবিল (Drawing Table)
২. বোর্ড পিন/ক্লিপ/সেলো টেপ (Board Pin )
৩. ড্রইং বোর্ড (Drawing Board)
৪. টি- স্কয়ার (Tea - Square)
৫. সেট স্কয়ার (Set Square)
৬. লস (Scale)
৭. ডিভাইভার (কাঁটা কম্পাস)- (Divider)
৮. চাঁদা বা প্রটেক্টর (Protactor)
৯. পেনসিল (Pencil)
১০. পেনসিল শার্পনার ( Sharpeiner)
১১. শিরিষ কাগজ (Glass Paper)
১২. রুমাল ( Handkerchief)
১৩. রাবার বা ইরেজার (Ereasar)
১৪. ফেঞ্চ কার্ড (French Card)
১৫. ইরেজিং শিশু (Ereasing Shield
১৬. ড্রইং বক্স (Drawing Box )
১৭, ড্রইং পেপার (Drawing Paper )
১৮. ট্রেসিং পেপার (Trcing Paper )
১৯. ডায়াগনাল স্কেল
২০. বো পেনসিল
২১. পেনসিল কম্পাস বা বো পেনসিল (Pencil Compass or Bow Pencil)
ড্রাফটিং যন্ত্রপাতির ব্যবহার (Uses of Drawing Tools & Instrument):
ড্রাফটিং কাজে যেসকল যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয় তাদের বিবরণসহ ব্যবহার নিচে উল্লেখ করা হলো-
ড্রইং টেবিল (Drawing Table)
ড্রইং টেবিলের উপর ড্রইং বোর্ড রেখে অংকন করার কাজে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত এ ধরণের টেবিল এর উচ্চতা ৩ ফুট এবং টেবিলের উপরিতল সামনের দিকে ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রী কেন্দ্র চালু থাকে।
বোর্ড পিন/কীপ/সেলো টেপ (Board Pin):
বোর্ডে ড্রইং শীট আটকানোর জন্য বোর্ড পিন ব্যবহার করা হয়। এটি বৃদ্ধাঙ্গুলির চাপ দিয়ে বোর্ডের উপর আটকানো হয়। এছাড়া টি স্কয়ার এবং সেট স্কয়ার এর নড়াচড়া বোর্ড পিন বা ক্লিপ দ্বারা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এ সকল ক্ষেত্রে ক্ষচ টেপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
ড্রইং বোর্ড (Drawing Board)
ড্রইং বোর্ডের উপর ড্রইং শীটকে আটকে রেখে অংকনজনিত কাজ করা হয়। নির্ধারিত ড্রইং বোর্ডের শ্রেনিবিদ্যাস-এর তালিকা টেবিলের মাধ্যমে দেয়া হলো-
ড্রইং বোর্ড দুই প্রকার। যথা-
১) ফ্লাট ড্রইং বোর্ড (Flat Drawing Board) এবং
২) অ্যাডজাস্ট্যাবল বা সমন্বয়যোগ্য ড্রইং বোর্ড (Adjustable Drawing Board)
১) ফ্লাট ড্রইং বোর্ড:
এই বোর্ডের উপরিভাগ সমতল ও মসৃণভাবে তৈরি। ক্লিপ বা বোর্ড পিন অথবা সেলো টেপ দিয়ে ড্রইং পেপার বোর্ডের উপরিতলে আটকানো হয়। ড্রইং বোর্ড সাধারণত নরম কাঠ যেমন- পাইন, ওক ইত্যাদি কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়। টি স্কয়ারের ক্রমাগত ঘর্ষনে বোর্ডের পার্শ্বটি বিকৃত ৰা ক্ষতিগ্রস্ত থেকে রক্ষায় বোর্ডের বাম দিকে পুরুত্বের মাঝ বরাবর এবোনাইটের একটি স্লিপ ঢুকানো থাকে যার উপর দিয়ে টি-ক্ষয়ারের স্টকটি সহজে যাতায়াত করতে পারে।
২) অ্যাডজাস্ট্যাবল বা সমন্বয়যোগ্য ড্রইং বোর্ড: এ ধরনের বোর্ডও সাধারনত নরম এবং হালকা ঠ দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। বর্তমানে ড্রইং বোর্ড তৈরিতে প্লাস্টিকের ব্যবহার লক্ষ করা যাচ্ছে। একটি অ্যাডজাস্ট্যাবল ফ্রেমের উপর ড্রইং বোর্ডটি বসানো থাকে। প্রয়োজনে ফ্রেমের উচ্চতা কম বেশী করা যায় এবং সুবিধামতো কোণে বেধে ড্রইং করা যায়। বোর্ডের সাথে ড্রইং শীট আটকানোর জন্য ক্লিপ বা সেলো টেপ ব্যবহার করা হয়।
টি- স্কয়ার (T- Square): টি স্কয়ারকে সংক্ষেপে টি বলে। অংকনের কাজে সমান্তরাল আনুভূমিক সোজা লাইন টানার জন্য ব্যবহৃত হয়। ইহা উৎকৃষ্ট মানের কাঠ দিয়ে তৈরি। দৈর্ঘ্য সাধারণত ২৪ থেকে ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। লাইন টানার জন্য ব্যবহৃত কিনারাতে শক্ত কাঠ বা এবোনাইট বসানো থাকে। বর্তমানে প্লাষ্টিকের তৈরি টা ও পাওয়া যায়। টা-এর দুই অংশ আছে।
যেমন- ১) স্টক এবং ব্লেড (চিত্র নং- ২.১১)
সেট স্কয়ার (Set Square)
বাংলায় একে ত্রিকোনী বলে। দুইটি ত্রিকোনা নিয়ে একটি সেট হয়। এর একটি ৩০০-৬০০ এবং অপরটি ৪৫০-৪৫০ কোন বিশিষ্ট। টা স্কয়ার এবং সেট ক্ষয়ার সহযোগে বিভিন্ন প্রকার উলম্ব রেখা, সমান্তরাল রেখা অতি সহজে এবং কম সময়ে টানা যায়।
সেট করার ও টি করার এর সাহায্যে বিভিন্ন কোনে লাইন টানার উপায় নিচের চিত্রে দেখানো হলো-
স্কেল (Scale) :
ইহা কাঠ, স্টীল, প্লাস্টিক, কার্ড বোড ইত্যাদি দ্বারা তৈরি। দৈর্ঘ্য ৬ থেকে ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। স্কেলের অংকন ইঞ্চি বা মিলিমিটার বা উভয় এককে হতে পারে। রৈখিক মাপ করার কাজে স্কেল ব্যবহার করা হয়।
ডিভাইডার (কাঁটা কম্পাস) (Divider)
বাংলায় একে কাঁটা কম্পাস বলে। এর দুইটি বাহুই সূচালো। এই সূঁচালো বাহুর প্রান্ত দিয়ে বস্তুর মাপ নিয়ে কাগজে বসানো যায়। আবার ড্রইং পেপার থেকে মাপ নিয়ে স্কেলে পড়া যায়। ডিভাইডার- এর গঠন দুই প্রকার। যেমন-
১) সরল ভিভাইভার
২) স্প্রিং ডিভাইডার।
চাঁদা বা প্রটেক্টর (Protactor)
চাঁদা সাধারনত স্বচ্ছ প্লাস্টিক জাতীয় বস্ত্র দ্বারা তৈরি করা হয়। যাতে সরল রেখা ও বিন্দুর সাথে মিলিয়ে দাগ দিতে সুবিধা হয়। চাদাঁটি ০ থেকে ১৮০ তে অঙ্কন করা থাকে। নির্দিষ্ট কোনে সরলরেখা টানতে অথবা নির্দিষ্ট মাপের কোন অংকনের জন্য চাঁদা ব্যবহার করা হয়। নিচের চিত্রে চাঁদা দিয়ে কোন মাপার পদ্ধতি দেখানো হয়েছে
পেনসিল (Pencil)
ড্রইং শীট অস্থায়ী লেখা, লাইন টানা বা জ্যামিতিক অংকনের জন্য পেনসিল ব্যাবহার করা হয়। পেনসিল সীস (Lead) এর গুণ অনুসারে পেনসিলকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন-
ক) শক্ত পেনসিল (Hard Pencil, Grade H-6H), বিভিন্ন গ্রেড বা মানের শক্ত পেনসিল বাজারে পাওয়া যায়। সবচেয়ে শক্ত পেনসিল হলো 6H ।
খ) মধ্যম পেনসিল (Medium Pencil, Grade HB), মধ্যম পেনসিলের একটি মাত্র গ্রেড আছে, আর তাহলোHBI
গ) নরম পেনসিল (Soft Pencil, Grade B 6B), 6B হলো সবচেয়ে নরম পেনসিল।
জ্যামিতিক বা ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং-এ যে সব রেখা টানা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
১) সীমারেখা বা বর্ডার লাইন,
২) কেন্দ্র রেখা বা সেন্টার লাইন ও
৩) ছেদ রেখা বা সেকশন লাইন ।
ঐ ধরনের রেখা টানতে 2H পেনসিল ব্যবহার করা হলো।
অপরদিকে মাগাঙ্করেখা বা ডাইমেনসন লাইন, খালি হাতে নকশা করা, বৃত্ত, বৃত্তচাপ, বর্ষক রেখা বা এক্সটেনসন লাইন, স্ত্রীর মুখ বা অ্যারো হেড তৈরির জন্য সাধারণত 2H পেনসিল ব্যবহার করা হয়।
পেনসিল মুখ তৈরিকরণ: পেনসিল-এর মুখ দুই ভাবে তৈরি করা হয়। যেমন-
১) কোনাকৃতি (Conepointed)
২) চেপ্টাকৃতি (Chisel Pointed)
ডায়াগনাল স্কেল (Diagonal Scale)
সুক্ষ মাপ নেওয়ার কাজে ডায়াগনাল স্কেল ব্যবহার করা হয়। এ স্কেলে এক ইঞ্চি সম্মুখ দিকে কর্ড স্কেল এবং পশ্চাৎ ভাগে এর একশো তিন ভাগ পর্যন্ত মাপ নেওয়া উপযোগী ডায়াগনাল নীতিতে বিভাগ রেখা দেওয়া থাকে। খাঁড়া দিকের বিন্দুগুলো থেকে সমান্তরাল রেখা টানলে একটি ডায়াগনাল স্কেল তৈরি হবে। চিত্রে ডায়াগনাল ক্ষেল দেখানো হলো।
বো পেনসিল (Bow pencil)
বো পেনসিল এর অপর নাম কম্পাস। এর একটি পা সরু ও অপর পায়ে পেনসিল ধারনের ব্যবস্থা আছে। পা দ্বয়ের অপর প্রান্তগুলো একসাথে রিভেট বা স্প্রিং দ্বারা সংযুক্ত। বৃত্ত বা বৃত্তচাপ অংকনের কাজে বো পেনসিল ব্যবহার হয়ে থাকে। নিচের চিত্রে একটি পেনসিল কম্পাস দেখানো হলো।
লীড পেন্সিল (Lcad Pencil)
রি-ফীল সীস ব্যবহার করা যায় এমন কলমকে স্টাইলাস বলে কলমের মাথায় অবস্থিত বোতামে চাপ দিলে সীস বের হয়ে আসে। এই সীসের ব্যাস অপেক্ষাকৃত কম থাকে ফলে সাধারন পেনসিলের মতো বারবার মুখ তীক্ষ্ণ করার প্রয়োজন হয় না ।
স্টেনসিল (Stencil):
ইংরেজী ছোট বড় অর এবং সংখ্যার মতো ফাঁক বিশিষ্ট প্লাস্টিকের ছাঁচকে স্টেনসিল বলে। লেটারিং করার কাজে স্টেনসিল ব্যবহার করা হয়।
টেমপ্লেট (Tamplate)
পাতলা প্লাস্টিক কেটে তৈরী বিভিন্ন মাপের বৃত্ত, ও বহুভূজের পাত বিশেষ। এ দিয়ে অতি সহজে বৃত্ত, উপবৃত্ত ইত্যাদি অংকন করা যায়।
ড্রাফটিং যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির সংরক্ষণ (Preservation of Drafting Tools & Equipment):
ড্রইং বাক্স ব্যবহার করে সংবেদনশীল কিছু কিছু ড্রইং যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে সংরক্ষন করা হয়। সঠিকভাবে সংরক্ষন না করলে যন্ত্রপাতিগুলো অচিরেই নষ্ট হয়ে যাবে নয়তো হারিয়ে যেতে পারে। অংকনের জন্য একটি ড্রইং বাক্সে যে সব যন্ত্রপাতি থাকে তা নিচে দেওয়া হলো-
১. স্কেল
২. ডিভাইডার কোটা কম্পাস)
৩. ইরেজার
৪. পেনসিল কম্পাস
৫. ফ্রেঞ্চ কার্ড
৬. টুকরা কাগজ
৭. সেট স্কয়ার
৮. চাদা
৯. পেনসিল শার্পনার
১০. ইরেজিং শিল্ড
১১. পেনসিল
ড্রাফটিং কাজে সাধারনত যন্ত্রপাতি ছাড়া ও বর্তমানে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার অধিক পরিমানে ব্যবহার হয়েছে। কম্পিউটার একটি সংবেদনশীল ইলেকট্রনিক যন্ত্র বিধায় ধূলা-বালি মুক্ত পরিবেশ বজায় রেখে কাজ করতে হবে। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত রুমে রেখে কাজ করা উত্তম।
ড্রাফটিং যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ব্যবহারের ক্ষেত্র ( Field of Uses of Drafting Tools & Equipments ) :
শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ
ড্রাফটিং ল্যাবে ভোমরা কোন কোন কাজে কী ধরনের ড্রইং টুলস ব্যবহার করার ব্যবস্থা নিবে তা হকে লিখ (একটি কাজে ব্যবহৃত ড্রইং টুলস এর নাম উল্লেখ করা হলো)-
ড্রাফটিং ল্যাবের নিরাপত্তা
ড্রাফটিং ল্যাবের নিরাপত্তায় নিম্নলিখিত বিষয় জানা ও পালন করা অত্যাবশ্যক। যেমন-
১. ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা পোশাক পরিধান করা। আপনার নিরাপত্তা পোশাক দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে আপনার সেরা ফর্মের সুরক্ষা
২. ড্রাফটিং ল্যাবে কাজের সময় খাওয়া বা পানাহার করা অনুচিত।
৩. কাজের সময় স্যুচালো টুলসগুলো সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত।
৪. সূঁচালো টুলসগুলো নিজ হাতে পরখ না করা।
৫. পেশাগত সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরন করা
৬. অনিরাপদ ও ত্রুটিযুক্ত সরঞ্জামাদি ব্যবহার পরিহার করা।
৭. স্কইং ম্যাটারিয়েলস যথাযথ স্থানে সংরক্ষণ করা।
৮. ডিজাইন ও ড্রাফটিং উভয় কাজের জন্য কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করা
৯. কার্যস্থল পরিষ্কার রাখা ।
পারদর্শিতার মানদন্ড
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম:
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
গ) প্রয়োজনীয় মালামাল (Raw Materials)
(ঘ) কাজের ধারা:
১. স্টোর হতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামাল সংগ্রহ কর।
২ . যথানিয়মে তালিকা অনুসারে সুরক্ষা সরঞ্জামাদি পরিধান কর।
কাজের সর্তকতা :
আত্মপ্রতিফলন:
মেকানিক্যাল ড্রাফটিং ল্যাবে ব্যবহৃত টুলস ও সরঞ্জামাদি সনাক্ত করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/ হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম :
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন) :
(গ) প্রয়োজনীয় মালামাল (Raw Materials)
(ঘ) কাজের ধারা:
১. স্টোর হতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামাল সংগ্রহ করবো।
২. যথানিয়মে তালিকা অনুসারে সুরক্ষা সরঞ্জামাদি পরিধান করবো।
কাজের সর্তকতা:
আত্মপ্রতিফলন:
মেকানিক্যাল ড্রাফটিং ল্যাবে ব্যবহৃত টুলস ও সরঞ্জামাদি সঠিক ব্যবহার করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড
ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম :
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুইপমেন্ট ও মেশিন)
(গ) প্রয়োজনীয় মালামাল (Raw Materials):
কাজের সর্তকতাঃ
আত্মপ্রতিফলন:
মেকানিক্যাল ড্রাফটিং ক্যাড ল্যাবে ব্যবহৃত টুলস ও সরঞ্জামাদি সনাক্ত করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হর নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে ।
পারদর্শিতার মানদন্ড
কাজের সর্তকতা:
আত্মপ্রতিফলন:
মেকানিক্যাল ড্রাফটিং ক্যাড ল্যাবে ব্যবহৃত টুলস ও সরঞ্জামাদি সনাক্ত করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
Read more